১০ জুলাই ২০২৫ - ১৪:২৫
ফিলিস্তিনিদের বিতাড়নের চক্রান্ত

গাজায় আধুনিক ‘বন্দিশিবির’ গড়ার পরিকল্পনায় ইসরাইল

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): ইসরাইলি সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন রাফাহ শহরে একটি তথাকথিত মানবিক নগর গড়ে তোলা হবে, যেখানে ধাপে ধাপে প্রায় বিশ লাখ ফিলিস্তিনিকে স্থানান্তর করা হবে। এই অঞ্চলে প্রবেশের পর তাদের আর বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না।

ইসরাইলের সামরিক বাহিনী প্রথমে ছয় লাখ ফিলিস্তিনিকে এক তথাকথিত মানবিক অঞ্চলের বাইরে সরিয়ে নেবে এবং পরে বাকিদের ধাপে ধাপে সরিয়ে নেবে। এই পরিকল্পনাটি মানবিক উদ্যোগের আড়ালে বাস্তুচ্যুতির একটি প্রক্রিয়া হবে বলে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো সতর্ক করেছে।

ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দপ্তর এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মধ্যে চলমান ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির আলোচনার সময় এই মানবিক নগর নির্মাণের কাজ শুরু হতে পারে।

সমালোচকরা বলছেন, এই পরিকল্পনা এবং ফিলিস্তিনিদের তৃতীয় দেশে স্বেচ্ছায় চলে যাওয়ার আহ্বান ইতিহাসের অন্ধকার অধ্যায়ের পুনরাবৃত্তির মতো। ইসরাইলের মানবাধিকার গোষ্ঠী গিশার নির্বাহী পরিচালক তানিয়া হ্যারি বলেছেন, এটি মানুষকে জোর করে একটি বড় বন্দিশিবিরে ঢোকানোর মত পরিস্থিতি তৈরি করবে, যেখানে ইসরাইলের উদ্দেশ্য স্পষ্ট যে তারা ফিলিস্তিনিদের তাদের মাতৃভূমি থেকে বের করে দিতে চায়।

ফিলিস্তিনিরা গাজাকে তাদের জাতীয় ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেখে এবং তাদের উচ্ছেদের যেকোনো পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মধ্যে আশঙ্কা রয়েছে যারা সাময়িকভাবে পালাবে, তারা আর কখনো ফিরে আসতে পারবে না, যা ‌‌‌‌১৯৪৮ সালের নাকবার সময়কার গণবিচ্ছেদের পুনরাবৃত্তি হবে।

ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির পক্ষে সমর্থন জানালেও ফিলিস্তিনিদের জোর করে উচ্ছেদের ধারণাকেও সমর্থন করেছেন। নেতানিয়াহু হোয়াইট হাউজে এক বৈঠকে বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের থাকা বা চলে যাওয়ার বিষয়ে তাদের স্বাধীন সিদ্ধান্তের সুযোগ থাকা উচিত, যদিও মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর মতে ইসরাইল তাদের দেশত্যাগে বাধ্য করার নীতি গ্রহণ করেছে।

ইসরাইল সরকার গাজায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কোনো ভূমিকা রাখার সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করেছে, যা যুদ্ধবিধ্বস্ত এই অঞ্চলে একতরফা নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার তাদের উদ্দেশ্যকে স্পষ্ট করেছে।

Your Comment

You are replying to: .
captcha